বাংলাদেশ থেকে সাউথ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে ২০২৫
দক্ষিণ কোরিয়া উন্নত প্রযুক্তি, শক্তিশালী অর্থনীতি ও সমৃদ্ধ সংস্কৃতির দেশ। কাজের সুযোগ, উচ্চশিক্ষা, বিনিয়োগ কিংবা পর্যটনের জন্য প্রতি বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে হাজারো মানুষ এ দেশে পা রাখে।দক্ষ জনশক্তির জন্য কোরিয়ান শ্রমবাজার বেশ আকর্ষণীয় যেখানে সরকারি নিয়োগের মাধ্যমে কাজের সুযোগ পাওয়া সম্ভব।
পাশাপাশি স্টুডেন্ট ও বিজনেস ভিসায়ও অসংখ্য মানুষ দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন সম্ভাবনার সন্ধানে যায়। বাংলাদেশ থেকে সাউথ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে জানতে এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন। দক্ষিণ কোরিয়ায় যাওয়ার দুটি প্রধান উপায় রয়েছে; সরকারিভাবে ও বেসরকারিভাবে।
সরকারিভাবে গেলে খরচ তুলনামূলকভাবে কম। তবে বেসরকারিভাবে কর্মসংস্থানের জন্য গেলে খরচ কয়েকগুণ বেশি হতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া যেতে আগ্রহীদের বাংলাদেশ থেকে সাউথ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে জানতে হয়।
বাংলাদেশ থেকে সাউথ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে?
দক্ষিণ কোরিয়া উন্নত প্রযুক্তি, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক অগ্রগতির এক বিস্ময়কর দেশ। এশিয়ার এই গন্তব্য এখন শুধু পর্যটকদের জন্য নয়, শিক্ষার্থী, কর্মজীবী এবং ব্যবসায়ীদের কাছেও আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। তবে এই স্বপ্ন পূরণ করতে হলে বাংলাদেশ থেকে সাউথ কোরিয়া যেতে কত টাকা লাগে সঠিক ধারণা থাকা জরুরি।
স্টুডেন্ট ভিসা: লটারির ঝামেলা ছাড়াই যোগ্যতা থাকলে আপনি স্টুডেন্ট ভিসায় দক্ষিণ কোরিয়া যেতে পারবেন। কোরিয়ান ভাষার উপর ভালো দখল থাকা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় যেতে আনুমানিক প্রায় ৩ থেকে ৮ লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
কাজের ভিসা: দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজের ভিসায় যেতে হলে কাজের দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সনদ থাকা বাধ্যতামূলক। বোয়েসেলের মাধ্যমে সরকারিভাবে গেলে আনুমানিক ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা খরচ হয়। তবে মনে রাখতে হবে, কাজের উদ্দেশ্যে গেলে লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়া অপরিহার্য।
বিজনেস ভিসা: দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যবসা করতে চাইলে কমপক্ষে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। সাধারণত এই ভিসা ৯০ দিনের জন্য দেওয়া হয়। তবে তা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। বিজনেস ভিসার জন্য আনুমানিক খরচ ৩ থেকে ৫ লাখ টাকা হয়।
টুরিস্ট ভিসা: দক্ষিণ কোরিয়ার মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য উপভোগ করতে চাইলে টুরিস্ট ভিসা আপনার জন্য সেরা হতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়া টুরিস্ট ভিসার জন্য আনুমানিক খরচ পড়বে ২ থেকে ৪ লাখ টাকা।
দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার উপায়
দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজের জন্য যাওয়ার অন্যতম নিরাপদ ও কার্যকর উপায় হলো ইপিএস (Employment Permit System) এর আওতায় সরকারিভাবে বোয়েসেলের মাধ্যমে যাওয়া। প্রতিবছর হাজারো বাংলাদেশি দক্ষ কর্মী এই পদ্ধতিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজের সুযোগ পায়।
দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার প্রক্রিয়াটি ছয়টি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথমে বোয়েসেলের ওয়েবসাইটে মার্চ-এপ্রিল মাসে নিবন্ধন করতে হয়। নিবন্ধনের পর লটারির মাধ্যমে প্রার্থী নির্বাচন করা হয়। এরপর নির্বাচিত প্রার্থীদের কোরিয়ান ভাষার ২০০ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হয়, যেখানে রিডিং ১০০ এবং লিসেনিং ১০০ নম্বর থাকে।
ভাষা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে দক্ষতার পরীক্ষা নেওয়া হয়, যেখানে কাজের দক্ষতা এবং বর্ণান্ধতা যাচাই করা হয়। এরপর সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং নিজ থানায় পুলিশ ক্লিয়ারেন্স নিতে হয়।
বোয়েসেলের মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়া যাওয়ার খরচ তুলনামূলক কম। সার্ভিস চার্জসহ মোট খরচ মাত্র ৩৩,৫২৪ টাকা। বিমানভাড়া আনুমানিক ৫০ থেকে ৭৭ হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া জামানত হিসেবে ১ লাখ টাকা দিতে হয়, যা পরে ফেরত দেওয়া হয়।
দক্ষিণ কোরিয়া কাজের বেতন কত?
দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরা ন্যূনতম মাসিক ১.৮ লাখ টাকা আয় করেন। ওভারটাইম করলে এই আয় ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। থাকা-খাওয়ার খরচ কোম্পানি বহন করায় অনেক কর্মী মাসিক আয়ের বেশিরভাগ অংশ বাড়িতে পাঠাতে বা সঞ্চয় করতে সক্ষম হন।
কোরিয়ান ভাষা শেখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বোয়েসেল অনুমোদিত ৪০টি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে ভাষা শেখানো হয়। অনেকেই ইউটিউব বা গুগল ট্রান্সলেট ব্যবহার করেও ভাষা শিখে সফল হয়েছেন। ভাষাগত দক্ষতা থাকলে দক্ষিণ কোরিয়ায় কাজের অভিজ্ঞতা আরও সহজ এবং ফলপ্রসূ হয়।

যেকোনো ধরনের তথ্য জানতে টেলিগ্রামে যুক্ত হতে পারেন। ২৪ ঘণ্টা বিভিন্ন দেশের ভিসা সম্পর্কে আপডেট পাবেন। ফ্রি ভিসা তথ্য ও সার্ভিস পেতে এখনই লিংকে ক্লিক করে আমাদের অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেল যুক্ত হোন: বিডি ভিসা তথ্য